জামালপুরের তারাটিয়া আলহাজ্ব ফজিতননেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে

জামালপুরে স্কুল ভবন সংকট: তারাটিয়া আলহাজ্ব ফজিতননেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে

জামালপুরের তারাটিয়া আলহাজ্ব ফজিতননেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা দুর্ভোগে

অলিয়ার মীর, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি, জামালপুর: জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত তারাটিয়া আলহাজ্ব ফজিতননেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। ভাঙাচোরা কক্ষগুলির কারণে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টির এই অবস্থা চললেও, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।

বিদ্যালয়ের ইতিহাস এবং বর্তমান অবস্থা

১৯৯৭ সালে ১ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয়টি প্রাথমিকভাবে ২০০১-২০০২ সালে নিম্ন মাধ্যমিক এবং ২০১৮-২০১৯ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে এখানে ৬৭২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে, তবে শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। ৯টি শ্রেণিকক্ষে ৬৭২ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে, যা বৃষ্টির সময়ে আরও জটিল হয়ে ওঠে।

শ্রেণীকক্ষ সংকট এবং শিক্ষার্থীদের মতামত

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সেলিনা আক্তার বলেন, "বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার মান ভালো হলেও, শ্রেণিকক্ষ সংকট এবং ভাঙাচোরা কক্ষগুলির কারণে পড়াশোনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে, বৃষ্টি হলে শ্রেণিকক্ষে পানি পড়ে এবং পাঠদান ব্যাহত হয়।"

নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী উর্মি আক্তার জানান, "আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অন্য বিদ্যালয়ের তুলনায় ভালো, কিন্তু শ্রেণীকক্ষ সংকটের কারণে ভর্তি হতে কিছুটা দ্বিধা ছিল। তবে আমরা দ্রুত একটি আধুনিক ভবন চাই।"

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং অভিভাবকদের অভিযোগ

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তালেব বলেন, "আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় বিগত সরকার আমাদের বিদ্যালয়ে উন্নয়ন করতে পারিনি। শ্রেণীকক্ষগুলো টিনশেড এবং ভাঙাচোরা, ফলে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।"

অভিভাবক মীর সেলিম বলেন, "এ উপজেলায় এমন বিদ্যালয় দ্বিতীয়টি নেই। আশপাশের বিদ্যালয়ে ভবন নির্মাণ হচ্ছে, কিন্তু আমাদের বিদ্যালয়ে কোনো উন্নয়ন করা হয়নি।" আরেক অভিভাবক, আপেল মাহমুদ বলেন, "এ বিদ্যালয়ের সুনাম রয়েছে, কিন্তু শ্রেণিকক্ষ সংকট এবং ভাঙাচোরা অবস্থা নিয়ে অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানদের ভর্তি করতে চাইছেন না।"

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফা আক্তার জানান, "সরকার এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিলে আমরা তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবো। তবে আমাদের করণীয় কিছু নেই, এলাকার এমপি-মন্ত্রীরা এসব সিদ্ধান্ত নেন।"

Next Post Previous Post